নাটোরের সকল ইউএনও নারী-অনন্য নারী দিবস ২০২৩

 

নাটোরের নাম শুনলেই বনলতা সেন কিংবা অর্ধবঙ্গেশ্বরী রানী ভবানীর কথা মনে পড়ে। আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন, আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন-বনলতা সেন কবি জীবনানন্দ দাসকে সত্যিই দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলেন কি না, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে নাটোরের জেলার ৭ উপজেলার সাধারণ মানুষকে সেবা দিয়ে হৃদয় জয় করছেন ৭ জন নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

বনলতা সেন কবি জীবনানন্দ দাসের অনবদ্য সৃষ্টি এবং সাহিত্যানুরাগীদের কাছে ভীষণ প্রিয় এক চরিত্র, বাস্তবে তার অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় থাকলেও নবাবি আমলে গড়ে ওঠা নাটোর রাজ্যের মহারানি ছিলেন অর্ধবঙ্গেশ্বরী রানী ভবানী। তিনি ছিলেন নাটোর রাজবংশের উজ্জ্বলতম চরিত্র।

জানা যায়, রানী ভবানীর রাজ্য প্রদক্ষিণ করতে ৩৫ দিন সময় লাগত। দীর্ঘ ৫০ বছর সুশৃঙ্খলভাবে তিনি রাজ্য শাসন করেছেন। কালক্রমে ইংরেজ কোম্পানি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন আনে, একসময় জমিদারি প্রথাও বিলুপ্ত হয়। তবে, অসাধারণ ব্যক্তিত্বের জন্যই রানী ভবানীর স্মৃতি বাংলার মানুষের কাছে উজ্জ্বল হয়ে আছে। সেই সাথে স্বাধীনতা–পরবর্তী দেশের শাসনব্যবস্থায়ও নারীদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো।

সেই রাজ্য অর্থাৎ বর্তমান নাটোর জেলাটি সাত উপজেলায় বিভক্ত হয়েছে। নাটোরে সাত উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদে দায়িত্ব পালন করছেন সাতজন নারী। উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীর দায়িত্ব পালন স্থানীয়দের প্রশংসা অর্জন করেছে। নির্বাহী কর্মকর্তা পদে তারা প্রত্যেকেই যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলছেন। বিশেষ করে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি সব মহলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে।

নাটোরের সকল ইউএনও নারী

২০২১ সাল থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সিংড়া উপজেলায় মাহমুদা খাতুনের পদায়নের মাধ্যমে নাটোরে শতভাগ উপজেলা পায় নারী ইউএনও। যোগদানের পর নানা প্রতিকূলতা পার করলেও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। আর নারী কর্মকর্তা হিসেবে পেয়েছেন সফলতাও।

সাত নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন নাটোর সদর উপজেলায় সারমিনা সাত্তার, নলডাঙ্গায় রোজিনা আক্তার, বাগাতিপাড়ায় নীলুফা সরকার, লালপুরে শামীমা সুলতানা, বড়াইগ্রামে মারিয়াম খাতুন, গুরুদাসপুরে শ্রাবণী রায় এবং সিংড়ায় মাহমুদা খাতুন।

ছবিতে বাম থেকে নাটোর সদর উপজেলার ইউএনও সারমিনা সাত্তার, বাগাতিপাড়ার ইউএনও নীলুফা সরকার, সিংড়ার ইউএনও মাহমুদা খাতুন, লালপুরের ইউএনও শামীমা সুলতানা, নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, বড়াইগ্রামের ইউএনও মারিয়াম খাতুন, গুরুদাসপুরের ইউএনও শ্রাবণী রায় এবং নলডাঙ্গার ইউএনও রোজিনা আক্তার।

নাটোর সদর উপজেলা

নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হলেন বিসিএস ৩৪ ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করে তিনি বিসিএস দিয়ে চাকরি শুরু করেছেন। এ বিষয়ে সারমিনা জানান, বাবার স্বপ্ন ছিল, তিনি একজন বড় মাপের প্রশাসক হবেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় ২০০৫ সালে তার বাবা মারা যান। পারিবারিক সিদ্ধান্তে কিছুদিনের মধ্যে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রকৌশলী স্বামীর অনুপ্রেরণায় স্নাতকোত্তর শেষ করেন। তবে স্নাতকোত্তর শেষ করার আগেই ৩৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন তিনি।

রানী ভবানীকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে সারমিনা কাজ করছেন জানিয়ে বলেন, ‘রানী ভবানী খুব অল্প বয়সে এই নাটোরে বসে অর্ধবঙ্গ শাসন করে প্রজাদের মন জয় করেছেন। আমরা তার পথ অনুসরণ করে নাটোরবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ তিনি আরও বলেন, প্রথমে কাজে কিছুটা সমস্যা হলেও এখন সবার সহযোগিতা পাচ্ছেন। সাতটি উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাই নারী। এটা নারীর ক্ষমতায়নে একটা বড় সাফল্য।

সারমিনা সাত্তার বলেন, ‘এটা নিশ্চই আমাদের জন্য সৌভাগ্য। অসহায় নারীরা যখন বিশ্বাস নিয়ে আমাদের কাছে আসেন, আমাদেরকে আপন মনে করে তাদের সব সমস্যার কথা অকপটে খুলে বলেন এবং ভরসা করেন ন্যায়বিচার পাওয়ার, তখন একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবে প্রশান্তি পাই এবং সকল পরিশ্রম সার্থক বলে মনে হয়।’

নলডাঙ্গা উপজেলা

বিসিএস ৩৩ ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন। তিনি বলেন, ‘মায়ের অনুপ্রেরণায় প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলাম। এখন নারী বা পুরুষ নয়, বরং একজন মানুষ হিসেবে নিজের পরিচয়ে অন্যের জন্য কিছু করার সুযোগ পাচ্ছি। এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা।’ আরও বলেন, কাজে ছোটখাটো বাধা থাকলেও সবার সহযোগিতায় তিনি নলডাঙ্গাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন।

বাগাতিপাড়া উপজেলা

বিসিএস ৩৪ ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা নীলুফা সরকার নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন গত বছর ২৮ জুলাই ২০২২। তিনি জানান, যোগদানের পর বাকি ছয় উপজেলায় নারী সহকর্মী পাওয়ায় তার আত্মতৃপ্তির জায়গাটা সমৃদ্ধ হয়েছে। এই বিষয়ে নীলুফা বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে একটু চ্যালেঞ্জিং কিছু করতে পছন্দ করতাম। মা–বাবার পাশাপাশি আমার নিজেরও ইচ্ছা ছিল প্রশাসনে চাকরি করব। কর্মজীবনে সেটাই হয়েছে।’

লালপুর উপজেলা

জেলার লালপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিসিএস ৩৪ ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে যেকোনো কঠিন কাজকে তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে দ্বিধাবোধ করেন না। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে নারী কর্মকর্তা শব্দটাই একটা ইতিবাচক শক্তিশালী সম্ভাষণ মনে হয়। অর্পিত দায়িত্ব মায়া-মমতা দিয়ে পালন করার অসাধারণ সাধ্য রয়েছে নারী কর্মকর্তার।’

বড়াইগ্রাম উপজেলা

১৪ অক্টোবর ২০২১ বড়াইগ্রাম উপজেলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মোসা. মারিয়াম খাতুন। তিনি বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী নানান উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই নাটোর পেয়েছে ৭ জন নারী ইউএনও। বাংলাদেশের প্রথম জেলা নাটোর, যেখানে সবগুলো উপজেলাতেই নারী ইউএনও দায়িত্ব পালন করছেন।’

গুরুদাসপুর উপজেলা

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিসিএস ৩৩ ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায়। পছন্দের প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি পেয়ে তিনি এমনিতেই খুশি। কর্মস্থলের অন্য ছয়টি উপজেলায়ও নারী কর্মকর্তারা দায়িত্বে থাকায় খুশির মাত্রাটা আরও বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে তার কাছে এখন পর্যন্ত এটা শ্রেষ্ঠ কর্মস্থল। রায় বলেন, পাঁচ মাস আগে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তিনি এখানে যোগদানের পর স্থানীয়রা অবাক হয়েছিল। তাদের সন্দেহ ছিল, তিনি জনগণকে সেবা দিতে পারবেন কি-না। বর্তমানে তার কর্মকাণ্ডে উপজেলাবাসীর আস্থা এসেছে।

সিংড়া উপজেলা

বিসিএস ৩৪ ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব আলাবামাতে স্নাতকোত্তর করেছেন লোকপ্রশাসনে। বেশ কয়েকটি কর্মস্থল পার করে সম্প্রতি গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সিংড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন। সরকারি সেবাগুলো জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ব্রত নিয়ে জনবান্ধব জনপ্রশাসন গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন মাহমুদা।

১৯৮৪ সালে নাটোর জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। আর গত বছর থেকে প্রথমবারের মতো সব উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নারীরা দায়িত্ব নেন। 

দেশের শাসনব্যবস্থায় সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮২ সালের আগ পর্যন্ত এই ক্যাডারে নারীর সুযোগ ছিল না। সুযোগ পেয়ে মেধাসহ সার্বিক যোগ্যতা দিয়ে সেই চিত্র আমূল বদলে দিয়েছেন নারী কর্মকর্তারা। তারই উদাহরণ নাটোর জেলার সবগুলো উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী নির্বাহী কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, দেশে ২০১৭ সালে ১০৬ জন নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন, এখন ১৬০ এর অধিক; যা মোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রায় ৩৪%। দেশে ২০১৭ সালে ৬ জন নারী জেলা প্রশাসক হিসেবে ছিলেন, এখন ১০ জন; যা জেলা প্রশাসকের প্রায় ১৬%। এছাড়া, সচিব পদে রয়েছেন ১০ জন।

নাটোরে অন্যান্য পদে নারী

উল্লেখ্য যে, নাটোরে সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, নিম্ন আদালতের বিচারক এমনকি পৌরসভার মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা।

গত ডিসেম্বরে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন মাহমুদা শারমিন। তিনি জেলার প্রথম নারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি বর্তমানে সদর সার্কেলের দায়িত্বে রয়েছেন।

জেলার সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রোজি আরা বেগম। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস ৩১ ব্যাচের রওনক জাহান।

জেলার নিম্ন আদালতের বিচারকার্যেও সরব ভূমিকায় রয়েছেন নারীরা। আদালতের ১৭ জন বিচারকের মধ্যে ৭ জন নারী বিচারক। এদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার বিচারক, লিগ্যাল এইড অফিসার, সহকারী জজ, সিনিয়র সহকারী জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। এই চিত্র স্থানীয় নারীদেরও অনুপ্রাণিত করছে।

বর্তমানে দেশের ছয়টি পৌরসভার মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। এদের মধ্যে নাটোরের দুই পৌরসভার মেয়র নারী। তারা হলেন নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি এবং লালপুরের গোপালপুর পৌরসভার মেয়র রোখসানা মোর্ত্তোজা লিলি। অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে চাপ সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও জনসেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত এই পদ অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের বলে মনে করেন এই দুই মেয়র।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার বলেন, ‘ইউএনও হিসেবে কাজটা সবার আগে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব। এটা আমাকে পালন করতেই হবে।
জনসেবার জন্যই যে জনপ্রশাসন, এই সত্য প্রতিষ্ঠিত কারতে চাই। আমি নারী বা পুরুষ, এটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার কাজ আমাকে গন্তব্যে নিয়ে যাবে। পুরুষরাই চ্যালেঞ্জ নিতে পারে, নারীরা পারে না- এমন প্রথা ভাঙ্গার সময় এখন।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন বলেন, ‘যে কোনো চাকরির চেয়ে পুলিশে চাকরি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। আর তা যদি নারীর ক্ষেত্রে হয় তবে মাত্রাটা আরো বেশি। তবে এটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন সেটা মুখ্য বিষয়। এখানে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। নারীরা যদি নিজেকে প্রথাগত চিন্তা-মননের জায়গা থেকে বের না করে তবে উত্তরণটা কঠিন।’

জেলা সিভিল সার্জন রোজি আরা বেগম বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ এখনো তুলনামূলক কম। তবে নেতৃত্বগুণ থাকলে নারী সব সহকর্মীদের সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে। অনুকূল কর্মপরিবেশ পেলে নারীর অগ্রযাত্রা আরো অপ্রতিরোধ্য হবে।’

নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিত্বে নারী তখনই সফল হবে যখন জনগণ তার পাশে থাকে। অবশ্যই রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে কাজ করা সহজ হয়। সাহস নিয়ে এগিয়ে এলে নারীদের পক্ষে সব ক্ষেত্রেই দারুন ভূমিকা রাখা সম্ভব।’

জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণ আরো বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন। ‘প্রশাসনে পুরুষদের চেয়ে নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা কম। নারীরা কর্মস্থলে পুরুষের চেয়ে বেশি নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার স্বাক্ষর রেখে চলেছে যা ইতিবাচক। তাদের অংশগ্রহণ বাড়লে জাতি উপকৃত হবে।’ বলেন আব্দুর রাজ্জাক।

নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারের কারণে জেলার সাত উপজেলায় ইউএনও হিসেবে সাত নারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নাটোরের প্রশাসনে থাকা নারী কর্মকর্তাগণ তাদের কাজে সর্বোচ্চ মেধা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। আমরা এই চর্চাকে উৎসাহিত করছি। তাদের কর্মদক্ষতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট এবং খুব খুশি যে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতি মেনে জেলার সব কটি উপজেলার ইউএনওরা তাদের কর্ম ও মায়া–মমতা দিয়ে স্থানীয় জনগণের মন জয় করছেন। নারীর ক্ষমতায়নে সারা বাংলাদেশে মধ্যে নাটোর এখন রোল মডেল।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *