এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার 

এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার (১৯৩৫-১৯৭৬)  বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে।

পরিবার ও শিক্ষাজীবন

মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার  ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলাধীন ছাতারবাড়ীয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাসমতুল্লাহ শাহ্ এবং মাতার নাম মোছাঃ হাছিনা বেগম।  ছয় ভাই-বোনের মধ্যে খাদেমুল বাশার ছিলেন মা-বাবার তৃতীয় সন্তান। মা ছিলেন একজন সুনিপুণ গৃহিণী ও বাবা ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। চাকরির কারণেই বাবার ছিল ভীষণ ব্যস্ততা। ফলে সংসারের গুরুদায়িত্ব পালন করতে হতো মাকেই । তাঁর মা-বাবা ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার ব্যাপারে ছিলেন খুব যত্নবান। 

তার পিতা হাসমতুল্লাহ শাহ্অ ত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্টার নম্বরসহ ১ম শ্রেণিতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করায় চৌগ্রামের রাজা তাকে সোনার কলম ও রূপার দোয়াত উপহার দেন। এ কৃতিত্বের জন্য তিনি হাজী মোঃ মোহসীন বৃত্তিও লাভ করেন।

তার পৈতৃক বাড়ি বগুড়া জেলায়। ডানপিটে ও চঞ্চল স্বভাবের বাশার ছিলেন পড়াশোনায় অসাধারণ মেধাবী। ‘ডিকেন’ ছিল তার ডাকনাম। মা-বাবা, ভাই-বোনরা তাঁকে ডিকেন নামেই ডাকতেন। কিন্তু কাগজে পত্রে তাঁর নাম ছিল মোঃ খাদেমুল বাশার। কে জানত এ দুরন্ত কিশোর একদিন সুবিখ্যাত বৈমানিক হয়ে দেশকে স্বাধীন করার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ‘বীর-উত্তম’ হওয়ার গৌরব অর্জন করবে!

তার স্ত্রীর নাম শিরিন বাশার। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে সবাই বিদেশে বসবাস করেন।

তিনি সাতক্ষীরা প্রাণনাথ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে আইএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৯৫৩ সালে তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনী একাডেমীর ফ্লায়িং শাখায় ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন।

কর্মজীবন

খাদেমুল বাশার ১৯৫৩ সালের জুনে পাকিস্তান বিমানবাহিনী একাডেমি রিসালপুরে ফ্লাইং শাখায় ক্যাডেট হিসাবে যোগদান করেন। দীর্ঘ দুই বছর কঠোর প্রশিক্ষণের পর ১৯৫৬ সালের ১৭ জুন তিনি একাডেমি থেকে জিডি (পি) শাখায় পাইলট অফিসার হিসাবে কমিশন লাভ করেন এবং পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফাইটার স্কোয়াড্রনে যোগ দেন। মিলিটারি একাডেমী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফাইটার স্কোয়াড্রনে যোগ দেন। অতঃপর খাদেমুল বাশার বিভিন্ন ফ্লাইট স্কোয়াড্রনে জঙ্গি বিমানের বৈমানিক হিসাবে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেন। তার পেশাগত দক্ষতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার কারণে ১৯৬০ সালে তাকে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর নবপ্রতিষ্ঠিত তদানীন্তন ঢাকা এয়ার বেস-এর ফ্লাইট সেফটি অফিসার হিসাবে বদলি করা হয়। এরপর তার বদলি হয় পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ৮ ও ৪০৬নং স্কোয়াড্রনের অধিনায়ক হিসাবে।

খাদেমুল বাশার কর্মজীবনে একাগ্রতা ও নিষ্ঠার কারণে একজন দক্ষ বৈমানিক হিসাবে সুখ্যাতির শিখরে আরোহণ করেন। পাকিস্তান বিমানবাহিনীর তিনিই একমাত্র বাঙালি বৈমানিক, যিনি সেসময় পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে বোম্বার স্কোয়াড্রনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন; যার বীরত্বগাথা মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হতো। ১৯৬৯-৭০ সালে তিনি একটি বোম্বিং স্কোয়াড্রনের অধিনায়ক ছিলেন।

১৯৬৯ সালে খাদেমুল বাশার ফ্লাইং প্রফিসিয়েন্সি ব্যাজ লাভ করেন এবং বিমানবাহিনীতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য টি.বি.টি (তমঘা-ই-বাসালাত পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর একটি পুরস্কার। এটি একটি নন-অপারেশনাল পুরস্কার।) খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭০ সালে তিনি উইং কম্যান্ডার পদে পদোন্নতি পান এবং ঢাকায় একটি র‌্যাডার স্কোয়াড্রনের অধিনায়কের দায়িত্বে নিয়োজিত হন।

১৯৭১ সালে রাডার স্কোয়াড্রনের অধিনায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মে মাসের শুরুতে আরও কয়েকজনের সঙ্গে পালিয়ে ভারতে যান এবং যুদ্ধে যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা চালায় নিরীহ মানুষের ওপর। এ বর্বর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, ইপিআর, পুলিশবাহিনীর বাঙালি সদস্যরাও বিদ্রোহ ঘোষণা করে যুক্ত হন মরণপণ সংগ্রামে। বর্বর এ গণহত্যা নিরীহ মানুষের রক্তে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। জ্বলে উঠেছিল বাঙালি জাতি। খাদেমুল বাশারও উপলব্ধি করেছিলেন, পাকিস্তানি শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হবে। তিনি আর সহ্য করতে পারছিলেন না। দেশমাতৃকার প্রতি অগাধ ভালোবাসা আর দায়বদ্ধতা থেকে তিনি সব খ্যাতি ও সমৃদ্ধির মোহ পেছনে ফেলে পাকিস্তান বিমানবাহিনী ত্যাগ করেন। ঢাকায় কর্মরত আরও কয়েকজনের সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ১৪ মে ১৯৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের লক্ষ্যে আগরতলার উদ্দেশে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর সঙ্গে দেখা করেন। বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও ওসমানীর কাছে তিনি স্থলযুদ্ধে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তার দুঃসাহসী মনোভাব ও চৌকশ যোগ্যতার জন্য জেনারেল ওসমানী জুন থেকে তাকে বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুর জেলা নিয়ে গঠিত মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টরের স্থলবাহিনীর স্থলযুদ্ধের কমান্ডার নিয়োগ করেন। স্থলযুদ্ধের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতা, দক্ষতা ও সাহসের সঙ্গে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে মোকাবিলা করেন।

মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার জুন মাস থেকে মুক্তিবাহিনীর ৬ নম্বর সেক্টরে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বৃহত্তর রংপুর ও বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ (ঠাকুরগাঁও মহকুমা, বর্তমান ঠাকুরগাঁও জেলা) নিয়ে ছিল এ সেক্টর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে এ সেক্টরে অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ সেক্টরে একটা বৈশিষ্ট্য ছিল, তা হলো সেক্টরসহ কয়েকটি সাব-সেক্টরের অবস্থান বাংলাদেশের ভূখণ্ডেই ছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনী তা দখল করতে পারেনি। ৬ নম্বর সেক্টর সামরিক ও ভৌগোলিক কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এর পশ্চিম ও উত্তরে ভারতের শিলিগুড়ি করিডর। খাদেমুল বাশারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পরিচালনায় ৬ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসংখ্য অপারেশন করেন। এর মধ্যে ভূরুঙ্গামারীর যুদ্ধ অন্যতম। নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ৬ নম্বর সেক্টরে গণবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন আখতারুজ্জামান মণ্ডল। তিনি একটি দলের দলনেতা ছিলেন। সেক্টর কমান্ডার মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার ৬ নম্বর সেক্টরের প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অবিচল আস্থা অর্জন করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে মিশতেন এবং সময়-সুযোগমতো তাদের সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করতেন। রোজা শুরু হওয়ার আগের দিন দুপুরের পর তিনি ভূরুঙ্গামারীর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণ অভিযান পরিকল্পনার জন্য সন্ধ্যার কিছু আগেই সাবসেক্টর অফিসে ক্যাপ্টেন নওয়াজিশসহ কয়েকজনকে নিয়ে আলোচনায় বসলেন। একটির পর একটি প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।

একপর্যায়ে ক্যাপ্টেন নওয়াজিশ খাদেমুল বাশারকে জিজ্ঝাসা করলেন “স্যার, আপনি অনেক দিন পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। কোনো সংবাদ পাননি। তাই তাদেরকে দেখে এলে ভালো হয়।” খাদেমুল বাশার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে হেসে বললেন, “ঠিকই বলেছ, তবে কি জানো, তোমরা মুক্তিযোদ্ধারাই আমার পরিবারের আপন সদস্য। তোমাদের সঙ্গে থাকা আর আমার পরিবারের সঙ্গে থাকা একই কথা। আগে অভিযান সফল করো। তোমরা শত্রুর সাথে যুদ্ধ করবে আর আমি পরিবারের সাথে দেখা করব, তা কী করে হয়।” সেক্টর কমান্ডারের পরিকল্পনা ও নির্দেশ অনুযায়ী রোজার আগের রাতে ভূরুঙ্গামারীর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলো। রাত নয়টায় অভিযানে অংশগ্রহণকারী সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি আবেগময় বক্তৃতা করলেন। “জয় বাংলা, বাংলার জয়” এবং “মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি” গানটি টেপ রেকর্ডারে বাজিয়ে শোনানো হলো। ‘অভিযানে অংশগ্রহণকারী দেড় শ মুক্তিযোদ্ধা প্রত্যেকের সঙ্গে তিনি হাত মেলালেন এবং ব্যক্তিগতভাবে আদর করলেন। বড় ও ছোট ঝুঁকিপূর্ণ আক্রমণ পরিচালনা, অ্যামবুশ ও রেইড ইত্যাদি নিজেই পরিচালনা করতেন। সফল রণকৌশল, অস্ত্র চালনা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, আত্মবিশ্বাস, সেই সাথে সহকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তার গভীর অনুভূতি, স্নেহ ইত্যাদি মুক্তিযোদ্ধাদের মন থেকে কোনো দিন মুছে যাবে না।

স্বাধীনতার পর

স্বাধীনতাযুদ্ধে অসামান্য ও দুঃসাহসী কৃতিত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বীর-উত্তম’ রাষ্ট্রীয় খেতাবে সম্মানিত করে। স্বাধীনতার পরপরই এ বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার নেতৃত্বে রংপুর সেনানিবাসে ৭২ পদাতিক ব্রিগেড প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং তিনি এর কমান্ডার নিযুক্ত হন। বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার সেনাবাহিনীর ব্রিগেড কমান্ডার হওয়া সামরিক ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা।

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তিনি বিমানবাহিনীর চাকুরিতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটির অধিনায়ক নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে খাদেমুল বাশার এয়ার কমোডর পদে পদোন্নতি পান এবং তাঁকে যুদ্ধ পরিচালনা ও প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিয়োগ করা হয়।১৯৭৬ সালে তিনি বিমানবাহিনীর চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। এয়ার ভাইস মার্শাল পদে পদোন্নতি লাভের (১৯৭৬ সালের ৩ মে) পর তিনি উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে পেট্রোলিয়াম, খাদ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় এবং পর্যটন বিভাগের দায়িত্ব লাভ করেন।

খেতাব ও সম্মাননা

১৯৬৯ সালে খাদেমুল বাশার ফ্লাইং প্রফিসিয়েন্সি ব্যাজ লাভ করেন এবং বিমানবাহিনীতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য টি.বি.টি (তমঘা-ই-বাসালাত পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর একটি পুরস্কার। এটি একটি নন-অপারেশনাল পুরস্কার।) খেতাবে ভূষিত হন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গঠনে খাদেমুল বাশারের বিশেষ অবদান ছিল এবং স্বাধীনতা উত্তরকালে বিমানবাহিনী পুনর্গঠনের ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরোচিত অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত হন।

মৃত্যু

এই সাহসী বৈমানিক, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার ১৯৭৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিমানবাহিনীর উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ স্কুলের উদ্বোধন করেন ।

জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে উদ্বোধন শেষে তিনি উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ স্কুলের অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মফিজুল হককে সঙ্গে নিয়ে উদ্বোধনী ফ্লাইটের একটি বিমানে চড়ে আকাশে উড়লেন। উপস্থিত সবার চোখ তখন আকাশে। হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে উঠল চারপাশ। সবাই হতবাক হয়ে দেখছে তেজগাঁও বিমানবন্দরের পাশেই একটি দালানের উপর এসে বিমানটি সজোরে পতিত হলো। উড্ডয়নের পরপরই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ভয়ংকর এক শব্দে স্তব্ধ হয়ে যায় সবকিছু। একই সঙ্গে চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যায় জাতির একজন শ্রেষ্ঠসন্তান অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার ও স্কোয়াড্রন লিডার মফিজুল হকের জীবন। বিমানবাহিনীর যে ঘাঁটিতে তিনি একসময় অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, মৃত্যুর পর সেই ঘাঁটির নামকরণ করা হয় ‘বিমানবাহিনী ঘাঁটি বাশার’ নামে। উল্লেখ্য যে, উক্ত দুর্ঘটনায় একই সাথে স্কোয়াড্রন লীডার মফিজুল হকও শাহাদাত বরণ করেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *