দেশে প্রথমবারের মতো উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হলো ক্যারিয়ার সম্মেলন। নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার গোল-ই আফরোজ সরকারি অনার্স কলেজ মাঠে চলেছে দুই দিনের আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং ক্যাম্প ও চাকুরি উৎসব ২০২৩ এবং আইসিটি বিভাগের লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় জব ফেয়ার ও সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠান।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং ক্যাম্প। আর ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার চাকরি মেলার মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনের এই আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং ক্যাম্প ও ক্যারিয়ার উৎসব-২০২৩।
উপজেলার ৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধিত প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী উৎসবে অংশ নিয়েছেন এই আয়োজনে । চাকরির অফার নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছে ১৫টি আইটি প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও তরুণদের ফিল্যান্সিংয়ের বিষয়ে হাতে-কলমে কর্মশালা করিয়েছে বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার্স ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, কোডার্স ট্রাস্ট, নকরেক আইটি, জয়ী ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান। সফলতার কৌশলগুলো শেয়ার করেন সফল ফ্রিল্যান্সাররা। কোথায় ও কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে সে বিষয়ে বিশেষ সেশন নেন বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসের বাংলাদেশী প্রতিনিধিরা। আয়োজনের মধ্যে রয়েছে মোবাইল অ্যাপ উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালাসহ নানামুখী দক্ষতা অর্জনের পথ ও উৎসাহ।
সিংড়া আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং ক্যাম্প-২০২৩
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারসহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের সকল কৃতী সন্তানদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শুরু হয় ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর আধুনিক সাংস্কৃতিক একাডেমির পক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপান্তর নিয়ে কথক নৃত্য পরিবেশন করেন চঞ্চল মাহমুদ ও তার দল।
অনুষ্ঠানে সিংড়ার ইউএনও মাহমুদা খাতুনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন গোল-ই আফরোজ সরকারি অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: ফরহাদ হোসেন, পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, সাবেক ইউএনও এমএম সামিরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ওহিদুর রহমান শেখ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল ইমরান, সিংড়া ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ হুমায়ুন কবির। তার বক্তব্যের পরই এই প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দুই ফ্রিল্যান্সার আশিকুল ইসলাম ও সৌরভ চৌধুরী তাদের সফলতার গল্প শেয়ার করেন। তাদের বক্তব্য শেষে প্রকল্পের অংশগ্রহণকারী ৯৫০ জনের মধ্যে চার জনের হাতে সনদ তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সনদ গ্রহণ করেন নাটোরের মোঃ সাব্বির হোসেন, উম্মে হাবিবা সাথী এবং পাবনার মোঃ ইসহাক আলী ও জান্নাতুল ফেরদৌস। এছাড়াও ফ্রিল্যান্সার থেকে উদ্যোক্তা হওয়া ৬ ব্যক্তি সিংড়া শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিবেশন সেন্টারে প্রধান অতিথির কাছ থেকে স্থান বরাদ্দের বরাদ্দ পত্র গ্রহণ করেন। বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো ডিজিপ্রো ডিজিটাল, নকরেক আইটি, কোডার ট্রাস্ট, এনভিশন, জামান আইটি এবং শিখবো আমরাই।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সিনেমা-নাটকে দেখি শিক্ষিত বেকার তরুণীরা চাকুরির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘোরে। তাদের স্যান্ডেলের তলা ক্ষয়ে যায়। কিন্তু চাকরি হয় না। মামা-চাচা, প্রভাবশালী নেতা, সুপারিশ ও তদবির না থাকলে চাকরি হয় হয় না। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিগত ১৪ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ তৈরি করে দেয়ায় আমি আজ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে চাই, যথাযথ শিক্ষা গ্রহণ ও দক্ষতা অর্জন করলে বাংলাদেশের কোনো শিক্ষিত তরুণ-তরুণী ইনশাআল্লাহ বেকার থাকবে না।
সূর্যের মতো জ্বলে-পুড়ে পৃথিবীকে আলোকিত করতে উপস্থিত তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের ৫ কোটি তরুণ ছাত্র-ছাত্রীই ২০৪১ সালের শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। সেই জন্য আমরা দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার দিকে নজর দিচ্ছি।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে জব ক্রিয়েটর হিসেবে গড়ে তুলতে ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট জয় ভাইয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মাছ উপহার দেয়ার চেয়ে মাছ শিকারের কৌশল শেখানো হচ্ছে। এই সুযোগটা নিয়ে তোমরা আত্মসম্মানের সঙ্গে বাঁচবে। সূর্যের মতোই জ্বলবে। দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের শক্তি ও তারুণ্যের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সেল্ফ লার্নিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা আরো ১০ লাখ আইটি ফ্রিল্যান্সার আমরা বাংলাদেশের মাটিতে তৈরি করতে পারবো। এর ফলে বর্তমানে আইসিটি খাতের রপ্তানি আয় দেড় বিলিয়ন ডলার থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে পারবো। বিশ্বে মেধাভিত্তিক উদ্ভাবনী দেশ হিসেবে পরিচিত হবে বাংলাদেশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর ফ্রিল্যান্সিংয়ের হাতি খড়ি নিয়ে আলোচনা করেন আপওয়ার্কের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সফল নারী ফ্রিল্যান্সার জয়ীতা ব্যানার্জী। তিনি ফ্রিল্যান্সিং কী, কিভাবে নিজে নিজে শেখা যায়, দক্ষতা, স্ট্র্যাটেজি ইত্যাদি তুলে ধরেন। শেখার ক্ষেত্রে সেলফ এসেসমেন্টের ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি আরও জানান, মোবাইলে পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিং করা যাবে না। তবে শেখা ও প্রাক্টিস করা যাবে মোবাইল থেকেই।
নকরেক আইটির সিইও সুবীর নকরেক নিজের ফ্রিল্যান্সিং যাত্রার কথা তুলে ধরে বলেন, মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য সবসময় দৃঢ় থাকতে হয়। তিনি বাংলাদেশ ও বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বাজারের বিশালতার বিষয়ে ধারণা দেন এবং ফ্রিল্যান্সিং এ আসার কারণ জেনে পরিবারের অন্যদের বুঝানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ও নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য তার প্রশিক্ষণ ও উৎসাহের বিষয়ও উঠে আসে। নাটোরে প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি নিয়েও কথা বলেন সুবীর।
এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের নিয়ে দিনা ম্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে হিমালয় নকরেক এবং ওয়েব ডেভলপমেন্ট ও ডিজিটান নিয়ে প্রাঞ্জল নকরেক। দিনা ম্রি, বলেন ফ্রিল্যান্সিং এ আসলেই যে ডলার, এ চিন্তাটা মাথা থেকে ফেলে দিতে হবে। আপনার ধৈর্য থাকলে ও দক্ষতা অর্জন করতে পারলে, আপনাকে কাজ খুঁজতে হবেনা; কাজ আপনাকে খুঁজে নিবে।
নারী ফ্রিল্যান্সারদের অপার সম্ভাবনার ওপর বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফল ফ্রিল্যান্সার থরমা তৃষ্ণা দিও। মাদ্রাসায় পড়েও কীভাবে ডলার আয় করেন সেই বাস্তবতা তুলে ধরেন সফল ওয়েব ডেভলাপার ও ফ্রিল্যান্সার মোঃ মিনহাজ উদ্দীন। শেরপুরের এই যুবক জানালেন, আমার বন্ধুবান্ধবরা মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করলেও আমি এলাইসিটি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কওমী মাদরাসায় পড়েও এখন আপওয়ার্ক ও ফাইবার থেকে মাসে ২০-২৫ হাজার ডলার আয় করি।
আপওয়ার্ক এর লিড ম্যানেজার (অপারেশন) সাইদুল মামুন খান ভয়কে জয় করে কীভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়া যায় সেই বিষয়টি তুলে ধরেন আলোচনায়।
জুমার বিরতীর পর বিকেলে বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য সবচেয় চাহিদাসম্পন্ন দক্ষতা কোনগুলো তার ওপর আলোকপাত করেন কোডার ট্রাস্ট এর প্রশিক্ষক সৌম্য সুপ্রিয়া। তিনি জানালেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ও ওয়েব ডেভলপমেন্টে সর্বোচ্চ ৮ হাজার মার্কিন ডলার আয় করা যায়। এছাড়াও সফটওয়্যার উন্নয়নে গড়ে সাড়ে ৭ হাজার, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টে ৭ হাজার, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্টে ৬ হাজার
বিজনেস অ্যানালিস্টে সাড়ে ৫ এবং কনটেন্ট ক্রিয়েশনে ৫ হাজার ডলার আয় করা সম্ভব।
অ্যাকাউন্ট ও বুক কিপিংয়ে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আলোচনা করেন আপওয়ার্ক এর টপ রেটেড সেলার উৎপল কুমার।
ফ্রিল্যান্সার সফলতার গল্প আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন ডোমেইন ও ওয়েব হোস্টিং সার্ভার ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তায় সেরা ফ্রিল্যান্সার শিশির আহমেদ, ডিজাইনার এবি সিদ্দিক, এসইও এক্সপার্ট হাসিবুন হাসান এমিলি, ওয়েব ডেভেলপার সোলায়মান হায়দার এবং কাজ ৩৬০ প্রতিষ্ঠাতা এমরাজিনা ইসলাম।
বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় কুইজ ও পুরস্কার বিতরণী। বিজয়ীরা হলেন- সুপার হোসেন, সাদিয়া সুলতানা মিম এবং তুর্য। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সিংড়া পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের অনেকেই খুব সহজেই টাকা আয় করতে চেইলেও কষ্ট করতে চান না। কিন্তু যারা শেষ পর্যন্ত লেগে থাকেন তারাই সফল হন।
সিংড়া চাকুরি উৎসব-২০২৩
প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও পুঁজি’ এই তিনটির সমন্বয়ে এবং তারুণ্যের মেধাকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের “সোনার বাংলা” ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার “স্মার্ট বাংলাদেশ” ভিশন বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে সিংড়ায় অনুষ্ঠিত হয় চাকুরি উৎসব। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ শনিবার সকালে শুরু হয়ে বিকেল অবধি চলে এ আয়োজন।
উৎসবে সিংড়া উপজেলার ৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এসব শিক্ষার্থী উৎসবে তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের স্টলে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। যোগ্যতা অনুযায়ী তাঁরা চাকুরী পেয়েছেন এবং আগামীতেও পাবেন। উৎসবে চাকুরী সহায়ক তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক পাঁচটি সেশন থাকছে।
প্রথম সেশনে ‘স্মার্ট চাকুরীর মাধ্যমে স্মার্ট সিংড়া’ সেশনে আফসানা ইয়াসমিন, শিবলী সাদিকসহ সিংড়ার পাঁচজন সফল উদ্যোক্তা তাদের কার্যক্রম এবং সফলতার গল্প শোনান।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে একই স্থানে দিনব্যাপী সিংড়া আইসিটি ক্যাম্প-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। এ ক্যাম্পে দেশের খ্যাতনামা ফ্রিল্যান্সাররা তাদের সফলতার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
শনিবার বেলা ১১টায় সিংড়া গোল-ই-আফরোজ সরকারি কলেজে উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ শামসুল আরেফিন। সচিব বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশাল এক সামাজ্য। এ সামাজ্যের সাথে নতুন প্রজন্মের মেলবন্ধন তৈরি করে দেওয়া হবে। এভাবে এ প্রজন্ম স্মার্ট হবে। গড়ে উঠবে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট দেশ। তিনি বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে প্রযুক্তির এমন ব্যবহার করতে হবে যাতে নিজের পাশাপাশি দেশেরও ভালো হয়। হাইটেকপার্ক দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মাঠেঘাটে ইংরেজি কন্টেন্ট বানিয়ে বিখ্যাত পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বাসিন্দা দয়াল চন্দ্র বর্মন পরিকল্পনার গুরুত্ব নিয়ে আলাপ করেন, তুলে ধরেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেগে থাকার প্রয়োজনীয়তা।
সোলায়মান সুখন দয়াল চন্দ্র বর্মনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে যে কোন জায়গা থেকে সবকিছু করার অবারিত সুযোগের কথা বলেন। মেকি ভাব ছেড়ে নিজের পরিচয়ে তিনি সবকিছুতে দক্ষতাে উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বলেন। সিংড়ায় ক্যারিয়ার গঠনের অবাবনীয় সুযোগ কাজে লাগাতেও উৎসাহ দেন তিনি।
সিংড়ার ইউএনও মাহমুদা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ক্যারিয়ার ফেয়ারের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের এমন বিরল সুযোগ সৃষ্টির জন্য সাধুবাদ জানান। তিনি প্রযুক্তির খারাপ দিক এড়িয়ে সঠিক ব্যবহারের উপদেশ দেন। ডেডিকেশন নিয়ে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সকল বাধা পেড়িয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সিংড়াবাসী এগিয়ে থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিকেলে উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সনদ বিতরণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী তরুণ-তরুণী, ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশের যারা কর্ণধার, তাদেরকে আমি একুশের চেতনায় জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন একুশ মানে মাথা নত না করা, একুশ মানে নিজের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়া। আরও বলেন,বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে আমাদেরকে আদর্শ নাগরিক হতে হবে; আমাদের কর্মঠ, মেধাবী ও দক্ষ প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে।
তিনি চলনবিলের তরুণদের বলেন- তোমার জন্ম কোথায়, পড়াশোনা কোন প্রতিষ্ঠানে, এগুলো নিয়ে মন দুর্বল বা হতাশ হওয়া যাবেনা। আমাদের লক্ষ্য যদি স্থির থাকে, আমরা যদি দক্ষতা অর্জন করতে পারি, আমরা যদি কঠোর পরিশ্রম করে সততার সাথে এগিয়ে যাই; তাহলে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানো সুনিশ্চিত।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ২০৪১ সালের প্রযুক্তি নির্ভর মেধাবী উন্নত দেশ গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তারুণ্যের অফুরান শক্তিতে প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পূরণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি এবং মাইক্রো প্রসেসর নিয়ে কাজ করছে দেশের প্রযুক্তি খাত। আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে শীর্ষ প্রযুক্তির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা বদ্ধপরিকর। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তরুণ প্রজন্মকে শ্রম, মেধা সততা’র শক্তি নিয়ে দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে।
অনুষ্ঠানে ‘নিজের বলার মতো একটা গল্প’ শ্লোগান নিয়ে উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ইকবাল বাহার জাহিদ সহ অনেক দেশবরেণ্য উদ্যোক্তা উপস্থিত হয়ে মেলার সাফল্য নিশ্চিত করেন।
১৮-০২-২০২৩ তারিখে সিংড়া চাকুরি উৎসব-২০২৩ এ Golden Harvest Infotech Ltd. সহ বেশ কিছু কোম্পানির সংক্ষিপ্ত তালিকায় অর্ন্তর্ভূক্ত এক হাজার ৩০০ জনের মধ্যে ২০ জনকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন প্রতিমন্ত্রী। আয়োজন করা হয় র্যাফেল ড্রয়ের।